মঙ্গলবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৮

মডারেট ধার্মিক হলেও সে কি পারবে তার আদর্শ গোপন রাখতে ?


প্রমাণ এই যে দেখুন, সম্প্রতি কওমী মাদ্রাসা বিষয়ক ইস্যু নিয়ে জনৈক সেই বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক আরিফ আজাদের ভাষ্য। একটা বিচার করবেন সকলেই নিরাপেক্ষভাবে, এটাই কি মডারেট মুসলিমদের আধুনিক জিহাদের ডাক ? কারণ এরা বলছে সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি, সামনে সুসময় আসবেই এবং তারাও নাকি সেই প্রতীক্ষায় আছে। আর তাছাড়াও সে তার সম্পুর্ণ বক্তব্যে এটাই প্রকাশ করেছেন যে হেফাযতে ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে যে সংবর্ধনা দিয়েছে তাতে তারা মোটেও খুশি নয়। 
তাদের যুদ্ধই নাকি আওয়ামীলীগের সাথে। এইযে সোস্যাল মিডিয়াতে তার একটি বিশাল ফলোয়ার গোষ্ঠী, যাদেরকে সে প্রায়ই এই জাতীয় উস্কানি দিয়ে তাদের ব্রেন ওয়াশ করে এবং দেশের সরকারের বিরুদ্ধে দাড় করিয়ে দেয় বাংলাদেশ সরকার কি তাদের চোখে দেখে না ? 
নাকি এইযে এতো সাইবার এক্ট, স্পেশাল টিম তার সবই শুধুই মুক্তচিন্তক ও ব্লগারদের স্বাধীন মতামত প্রকাশে বাধা দেবার জন্যই তৈরি করা হয়েছে ?
আমরা ইতিহাস থেকে জানতে পারি পাকিস্তান গঠিত হবার মাত্র ২৪ বছরের মাথায় ধর্মীও মৌলবাদ আর ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার ফলে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাঙালী জাতি সাড়া দিয়ে দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রায় ৩০ লক্ষ বাঙালীর প্রাণ আর ২ লক্ষ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে ভৌগলিক ভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলো বাঙ্গালী জাতি।
এই ১৯৭১ এ যারা স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপরীতে থেকে পাকিস্তানি সেনাদের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে বাঙালী জাতিকে হত্যা, ধর্ষণ, লুট করতে সহযোগিতা করেছিলো তাদের ৯০% এর বেশি ছিলো মাদ্রাসার ছাত্র এবং শিক্ষক। এই কথা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বেশ কয়েকবার অত্যান্ত দুঃখের সাথে উপস্থাপন করেছিলো যখন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের যুদ্ধাপরাধী হিসাবে বিচার করা হচ্ছিলো। 
তারপরেও বঙ্গবন্ধু তাদের দূরে সরিয়ে না দিয়ে তৈরি করে দিয়েছিলেন “ইসলামী ফাইন্ডেশন” এবং মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যাবস্থাকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে টিকে থাকা আজকের দিনের সকল মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার সুত্রপাত ঠিক এভাবেই। আজ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে যখন দেখা গেলো এই মাদ্রাসার একটি বিরাট জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে চলেছে, কারণ তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারেই মানসম্মত নয়, আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মতো কোন যোগ্যতায় এই মাদ্রসা শিক্ষার্থীদের নেই, যেকারণেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে একটা মানসম্মত পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য কওমী মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদীস শিক্ষাব্যাবস্থাকে বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার মাস্টার্স এর সমমান ঘোষণা করলেন।
এর মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষার্থিদের অন্ধকারে না ঠেলে দিয়ে সাথে নিয়েই একটি আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখলেন। 
শেখানে এই "আরিফ আজাদ"-এর মতো হাতে গোনা কিছু কৌশলে উগ্রবাদী এবং সেই মাদ্রাসার তরুনদের মধ্যে উস্কানী দাতা মডারেট ধার্মিকরা একেবারেই খুশি হতে পারলেন না। 
দেখুন বর্তমানে প্রকাশ্যে তারা তাদের এই মনোভাব কিভাবে প্রকাশ করছে। এখন শুধু একটি প্রশ্ন সবার আগে চলে আসছে, আসলে তারা চায় কি ?
মৃত কালপুরুষ
০৫/১১/২০১৮
ঢাকা

একটি সন্ত্রাসী হামলা ও একজন মুসলমান এর মনোভাব।

২০১৭ সালের নভেম্বর মাসের শুরতেই আমেরিকার নিউয়র্ক এর ডাইনটাউনে একটি সন্ত্রাসী হামলা হয় যেখানে ৮ জন নিরিহ মানুষকে হত্যা ও ১২ জনকে আহত করা হয়েছিলো। ২০১৭ সালের নভেম্বরে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার পরেরদিনই সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে লিখেছিলাম। হঠাৎ করেই সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন মুসলমান ব্যাক্তির সাথে একটি বিতর্ক হয়। বিতর্কটিকে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সন্ত্রাসী হামলা সম্পর্কে তাদের মনোভাব বোঝার সুবিধার্থে একটি স্টাডী হিসাবে সংগ্রহ করে রাখার প্রয়াসেই এই ক্ষুদ্র সংগ্রহটি। এখানে আমি বিতর্কে যে যে আলোচনা এসেছে তার হুবুহু তুলে ধরছি শুধুমাত্র যে ব্যাক্তির সাথে বিতর্কটি হয়েছে সঙ্গত কারনেই এখানে আমি তার নাম বা পরিচয় গোপন করেছি মাত্র।
২০১৭ সালের সেই প্রতিক্রিয়াটি সম্পর্কেতো একটি প্রাথমিক ধারনা দিলাম, তারপরেও যদি কেউ সেই লেখাটি একবার দেখে আসতে চান তাহলে এখানে দেখতে পারেন। মূল লেখাটির টাইটেল ছিলো “ “আল্লাহু আকবার” শ্লোগানের সংজ্ঞা কি দাড়াচ্ছে ? এই লিংকে গিয়ে সেটা দেখে আসুন।
লেখাটির প্রতিক্রিয়া হিসাবে মন্তব্য বা মূল বিতর্ক হুবহু তুলে ধরা হয়েছে এখান থেকেই।
প্রথম পক্ষের মন্তব্য ভাই, এই সব কাহিনীর দিন শেষ হয়ে এসেছে, পশ্চিমারা এখন আর খুব একটা গিলে না, তার ঢেউ এখন গরীব দেশে গিয়ে পড়েছে, যেখানে বেকার যুবকদের সংখ্যা বেশী। আশা করি বুঝতে পেরেছেন আমি কি বলতে চেয়েছি।
নাইন ইলেভেন দিয়ে তো, শুরু হয়েছে এসব নাটক? অধিকাংশ আমেরিকান আর এসব বিশ্বাস করে না। তারা কম বেশী বুঝতে পারতেছে।
নইলে, আমেরিকায় মুসলিম হওয়ার হার নাইন ইলেভেনের পরে বেড়ে গেল কেন? ইসলমিক ড্রেসে সজ্জিত অমুসলিম আই এস আই এস লীডারদের জঙ্গী নাটকের কথা একটা টিভি চ্যানেলেও উঠে এসেছে, আগে কল্পনা করাও যেত না।
(এর উপর আমি একটা ভিডিও ও শেয়ার করেছিলাম। ঐ দিনও একটা শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান বলতেছিল, এসব গেম (নাইন ইলেভেন), নইলে আমেরিকায় অনেক বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে, সব ঘটনাই মানুষ দু-এক সপ্তাহেই ভুলে গেছে। কিন্তু এত বছর পার হয়ে গেল, কেন জানি নাইন ইলেভেনের ঘটনা আর মুছে না। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কেন মুছে না? সে বলল, মিডিয়া, ঐ মডিয়াই এটা টিকিয়ে রেখেছে আমার একথা বলার মুল উদ্দেশ্য হল, সব মানুষই বলদ না, প্রত্যক জিনিষের হিসাব আছে, যারা হিসাব করতে জানে, ভেরিফাই করতে জানে, তারা আপনাদের এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয় না, তারা নিজের ব্রেইন ব্যাবহার করে। মুক্তমনা যদি বলতে হয়, এরাই আসলে মুক্তমনা। আপনারা মুক্তমনার জ্যাকেট পরিধান করে মুক্তমনা বিরোধী কাজ করেন।
দ্বিতীয় পক্ষের প্রতিমন্তব্য এটা কিভাবে অপপ্রচার হতে পারে ? এই উবারের গাড়ির ড্রাইভার আল্লাহুআকবার বলে ৮ জন মানুষকে হত্যা করেছে আর ১২ জন মানুষকে আহত করেছে যাদের অধিকাংশ আর্জেন্টিনার নাগরিক এবং সেই চালক আটক হবার পরেও স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে সে ইসলাম প্রচার করেছে তার গাড়িতে রাখা আইএস এর পতাকা ছিলো এটাও সংবাদ কর্মীরা প্রকাশ করেছে। গতবছর নভেম্বর এর ২ তারিখে ম্যানহাটন এর ডাউনটাউনে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনাকে আপনি কিভাবে অপপ্রচার প্রমাণ করবেন ?
যুদ্ধ আর হত্যা ছাড়া কি আজকের দিনে এই পৃথিবীতে মধ্যপ্রাচ্যের আরব্য বর্বর বেদুইন জাতীর রাজনৈতিক দল ইসলাম নামক ধর্ম কোনদিনও প্রতিষ্টিত হতে পারতো ?
প্রথম পক্ষের প্রতিমন্তব্য অপপ্রচার বলি এই কারনেই যে, আপনার মূল উদ্দেশ্য হল নোংরা, ইসলামের বদনাম করা, যে হত্যা করেছে তার বদনাম করার জন্য নয়। এ জন্যই আপনারা যারা এহেন কাজ করে নিজেদের মুক্তমনা দাবী করেন, তাদের আমি কখনোই মুক্তমনা মনে করি না। মুক্তমনা একটা অনেক বড় ও মহত্ব ব্যাপার। যারা শত ভাল ও কল্যানকর কিছু থাকার পরও শুধুই মাত্র খারাপ দিকটাকে চিত্রায়িত করে তারা নোংরামনা, মুক্তমনা নয়, এ আমি বহুবার বলেছি।
আপনাদের কথাও যদি ধরি, তাহলেও কোরানে ১৫% এর বেশী ভুল পাবেন না। এবং) ৮৫% ভাল ও কল্যানের। তো কোরানের এসব কল্যানের বিষয়গুলো একবারো কি আপনার চোখে পড়ে না?
আসলে চোখে পড়বে কেন? চোখ পড়ার জন্য তো আর বেতন দেয়া হয় না, বরং ভালটা চোখে না পড়ার জন্যই বেতন দেয়া হয়, নাকি?
ঠিক আছে, ভালটা না বলেন, অন্তত সব জঙ্গী তৎপরতা নিয়ে লিখেন এবং সেই অনুপাত অনুযায়ী লিখেন, তাহলে না হলেও, একটু হলেও বলা যেত মুক্তমনা। তা না করে উল্টো অনুপাতে লিখেন। আজ আমি কয়েক বছর আগে আমেরিকার এফবিআই এর সন্ত্রাসীদের কনটেক্স বা শতকরা হারের প্রকাশ করা একটা টেবিল দেখাব, যাতে প্রমান হয় এফ বি আই ই মুক্তমনের অধিকারী, আপনারা নন। ওখানে তারা মুসলমান সন্ত্রাসী দেখিয়েছে মাত্র ৬%। তারা মুক্ত মনের অধিকারী এই কারনে যে,তারা এমন একটা সময়ের মধ্যে এমন একটা নিরপেক্ষ রিপোর্ট পেশ করেছে , যখন আমেরিকার বড় বড় মিডিয়া মুসলিম সন্ত্রাসীদের সংবাদ প্রচারে সারা পৃথিবী কাঁপিয়ে ফেলতেছে। আপনারা ইসলাম বিদ্বেসী নাস্তিকরা এক্ষেত্রে হলে কি করতেন? ১০০%ই মুসলিম সন্ত্রাসী দেখাতেন। আপনারাই বলুন এখানে কারা মুক্তমনা? এখানে অবশ্যই এফ বি আই।
শেষ করার আগে একটা কথা বলি, "কাউকে খারাপ প্রমান করতে মিথ্যা বা প্রতারনার আশ্রয় নেওয়া মানেই ষড়যন্ত্র, আর ষড়যন্ত্রের সাথে হাত মিলিয়েছেন বা ষড়যন্ত্র করেছেন তো নিশ্চিৎ হেরেছেন।" নৈতিক পরাজয় তো হয়েই রইল, বাকীটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। পৃথিবী ও প্রকৃতি ঐ ভাবেই ডিজাইন করা। পরের পার্টে আসছি আই এস নিয়ে, যেহেতু আমার আগের লেখায় কিছুই বুঝেন নি।
প্রথম পক্ষ তার এই দাবীর পক্ষে প্রমাণ হিসাবে এই মোবাইল স্ক্রিনসর্টটি দেখান।
দ্বিতীয় পক্ষের প্রতিমন্তব্য নিউ আমেরিকা নামে একটি সংগঠন আছে যে সংগঠন গত ১৭ বছর ধরে জরিপ করে দেখিয়েছে যে, অামেরিকায় ইসলামপন্থী সন্ত্রাসের জন্য মোট ১০৪ টি খুন হয়েছে এই ১৭ বছরে। আর অন্যান্য জনগোষ্ঠী মিলে খুন হয়েছে ৮১ জন।
বর্তমান আমেরিকার (USA) জনসংখ্যা হলো ৩২৫ মিলিয়ন মানে ৩০ কোটি ২৫ লক্ষ, আর তার ভেতর মাত্র ৩.৪৫ মিলিয়ন হলো মুসলমান আর কমপক্ষে ৩০০ মিলিয়ন বিভিন্ন গোত্রীয় খ্রিষ্টান। এখন আসুন দেখি খুনের পরিসংখ্যানঃ ৩.৪৫ মিলিয়ন মুসলিম খুন করেছে ১০৪ জন মানুষকে ২০০১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ( টুইন টাওয়ারে হামলায় খুনের হিসেবকে এ পরিসংখ্যানের বাইরে রাখা হয়েছে, ) আর অন্য সবার টোটাল সন্ত্রাসের কারণে খুনের পরিমাণ করেছে ৮১ জন মানুষের প্রাণহানি। তাহলে দেখা যায় গড়ে প্রতি মিলিয়নে মুসলিমদের কৃত খুনের সংখ্যা ৩০.১৫ জন মানুষ, আর খ্রীষ্টান এবং অন্যান্যদের গড় খুনের পরিমাণ প্রতি মিলিয়নে ০.২৭ মানুষ। এটাতে দেখা যাই যে ইসলাম ৩০.১৫/০.২৭= ১১১.৬৫ গুণ শান্তির ধর্ম।
চলুন বাংলাদেশের সাথে তুলনা করি, বাংলাদেশের মুসলিম সংখ্যা হলো ১৪২ মিলিয়ন। প্রতি ৩.৪৫ মিলিয়নের দ্বারা যদি ১০৪ জন খুন হয় তাহলে সে হিসেবে গত ১৭ বছরে তাহলে দেখা যায় কমপক্ষে ৪৩৯৫.১৩ সংখ্যালঘু খুন হয়েছে ২০০১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত মুসলিমদের দ্বারা। যদিও এই সংখ্যা আরো অনেক বেশি মনে হয়। আর সংখ্যালঘুরা খুন করতে পারে ১৬.২*.২৭=৪.৩৮ মুসলিম। তবে বাংলাদেশে কোনো একটা খুনও রেকর্ড হয়নি যা হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টানদের মাধ্যমে মুসলিমদেরকে করা হয়েছে ধর্মীয় কারণে।
অামেরিকায় মুসলিমরা মেরেছে অমুসলিমদের, শুধুমাত্র খৃষ্টানদের ওপর তাদের ইসলাম ধর্মভিত্তিক ঘৃণা তথা জিহাদের কারণে, আর খ্রীষ্টানরা মেরেছে hate crime এর কারণে। দুটোই ঘৃণাভিত্তিক খুন। একটা ধর্মের কারণে আর অন্যটি হচ্ছে হেইট ক্রাইম।
আর যদি ৯/১১ হামলায় নিহত ২৯৯৬ জন মানুষকে খুনের কথা ধরি তাহলে সেটা অামেরিকান মুসলিমদের হিসেবে দাঁড়ায় প্রতি মিলিয়নে ৮৯৮.৫৫ টি হত্যাকান্ড। অর্থাৎ প্রতি এক মিলিয়ন মুসলিম ৮৯৮.৫৫ টি জেহাদী হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। অার এ হিসেবে ইসলাম অন্যান্য ধর্মের তুলনায় ৩৩২৭.০০ গুণ শান্তির ধর্ম (?) হিসেবে গৌরব করতেই পারে?
বাংলাদেশের জনসংখ্যার সঙ্গে তুলনা করলে ২০০১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত জিহাদী হামলায় খুনের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ৩৬৯৬১.০০ জন। এবার আপনি ২০০১ থেকে নিয়ে ২০১৮ পর্যন্ত যতগুলি ইসলামিক খুন সংঘটিত হয়েছে ইসলামিস্টদের দ্বারা তার পরিসংখ্যান জেনে নিন বিভিন্ন পত্রিকার পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট দেখে।
নিউ আমেরিকা ডট অর্গ ওয়য়েসাইটের সেই রিপোর্টটি এই লিংকে দেখতে পারেন।
প্রথম পক্ষের প্রতিমন্তব্য একটা সরকারী সংস্থা রিপোর্ট আর একটা বেসরকারী সংস্থা এক হয়ে গেল? ওটা যে আপনাদেরই সংস্থা না, তার গ্যারেন্টি কি? পছন্দনীয় সময়, পছন্দনীয় শতকরা হিসাব, চমৎকার। এখানে নানান ধরনের সংস্থা আছে।
নীচে কিছু তথ্য দিলাম। এই হত্যাকন্ডের হিসাবটাও আপনাদের শতকরা হিসাবের সাথে মিলিয়ে নেবেন।
আপনী মানেন আর না মানেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম কখনোই জঙ্গীবাদকে সমর্থন করেনি, করবেও না। ইতিহাস কি বলে দেখুন!!!
১) হিটলার, একজন অমুসলিম। ৬০ লক্ষ ইহুদি হত্যা করেছিলো। মিডিয়া একবারও তাকে বলেনি সে খৃষ্টান টেররিস্ট !!!
২) জোসেফ স্ট্যালিন, একজন অমুসলিম। সে ২০ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেছে, এবং ১৪. ৫ মিলিয়ন মানুষ অসুস্থ হয়ে ধুকে ধুকে মারা গেছে। মিডিয়া একবারও তাকে বলেনি সে খৃষ্টান টেররিস্ট !!!
৩) মাও সে তুং একজন অমুসলিম। ১৪ থেকে ২০ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেছে ! মিডিয়া একবারও তাকে বলেনি সে বৌদ্ধ টেররিস্ট !!!
৪) মুসলিনী (ইটালী) ৪ লাখ মানুষ হত্যা করেছে ! সে কি মুসলিম ছিল ? অন্ধ মিডিয়া একবারো বলে নাই খৃষ্টান টেররিস্ট !!!
৫) অশোকা (কালিঙ্গা বেটল) ১০০ হাজার মানুষ হত্যা করেছে ! মিডিয়া একবারও তাকে বলেনি সে হিন্দু টেররিস্ট !!!
৬) আর জজ বুশ ইরাকে,আফগানিস্থানে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেছে ! মিডিয়া তো বলে নাই, খৃষ্টান টেররিস্ট !!!
৭) এখনো মায়ানমারে প্রতিদিন মুসলিম রোহিঙ্গাদের খুন , ধর্ষণ , লুটপাট, উচ্ছেদ করছে ! তবুও কোনো মিডিয়া বলে না বৌদ্ধরা টেরোরিস্ট !!!
ইতিহাস সাক্ষী পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে বড় বড় গনহত্যা করেছে নন মুসলিমরা আর এরাই দিন রাত গণতন্ত্র জপে মুখে ফেনা তুলে ! অথচ এদের দ্বারাই মানবতা লুন্ঠিত !
আরেটা কথা ধর্মলম্বীতার কারনে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশী হত্যা হয়েছে মুসলিম। না জানা থাকে ইতিহাস ঘেটে দেখুন। সম্প্রতি ঘটনা থেকেও যদি নেই, তাহলে দেখা যাবে, শুধু ইরাকেই হত্যা করা হয়েছে বেশী না এক, মাত্র এক আর কি, এক মিলিয়ন তথা দশ লক্ষ নিরীহ মুসলিম এগুলোও দয়া করে শতকরায় মিলিয়ে নেবেন আর আমেরিকায় যে ১০৪ জন হত্যা হয়েছে, তার অধিকাংশ আই এস আই এস দ্বারা, তাই না? আর এই আই এস ইসলামের নামে অমুসলিমদের সংগঠন, তা ট্রাম্পের মুখেরই কথা, আমার না। যার মানে দাড়ায়, নাইন ইলেভেনের মত আই এস আই এসও একটা ষড়যন্ত্র।
দ্বিতীয় পক্ষের প্রতিমন্তব্য উপোরোক্ত মন্তব্যে এটাই পরিষ্কার বোঝা যায় যে আপনার আন্তর্জাতিক যুদ্ধ নীতি, গনহত্যা, হত্যা, ধর্মীয় সংঘাত, সাম্প্রদায়িক হত্যা, এবং জঙ্গিবাদ সম্পর্কে কোন ধারনায় নেই। তা না হলে আপনি বর্তমান সময়ের ইসলামী সন্ত্রাসের পক্ষে কথা না বলে নিরাপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করতেন। আপনি ইসলামী সন্ত্রাসের বিপক্ষে যুক্তি হিসাবে হিটলার, জোসেফ স্ট্যালিন, মাও সে তুং, অশোকা, জর্জ বুশ এর মতো ব্যাক্তিদের নাম এখানে উল্লেখ করতেন না। জানিনা তাদের সম্পর্কে আপনার ধারনা কেমন তবে এটুকু যেনে রাখবেন তারা প্রত্যেকেই ছিলো ধার্মিক এবং সাম্প্রদায়িক তাদের মধ্যে একজনকেও ধর্মে বা ঈশ্বরে অবিশ্বাসী পাবেন না। আরো ভালো হয় তাদের সম্পর্কে ইতিহাস পড়ুন জানতে থাকুন আর সেই সাথে এটাও জানতে থাকুন যুদ্ধ হচ্ছে রাষ্ট্রীয় বা অরাষ্ট্রীয় পক্ষগুলোর মধ্যে সুসংগঠিত এবং কখনও কখনও দীর্ঘস্থায়ী সশস্ত্র সংঘর্ষ কেউ বলা হয়ে থাকে। এখানে কোন পক্ষ যদি একতরফাভাবে সশস্ত্র আক্রমণাত্মক কার্যকলাপ চালিয়ে যায় এবং তার প্রত্যুত্তরে অপর পক্ষ কোন পদক্ষেপ না গ্রহণ করে তবে তাকে যুদ্ধ বলা যায় না। আবার আরেকভাবে বলতে গেলে, যুদ্ধাপরাধ কাকে বলে সেটা কি আপনার জানা আছে ? যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে কোন যুদ্ধ বা সামরিক সংঘাত চলাকালীন সময়ে কোন ব্যক্তি কর্তৃক বেসরকারী জনগনের বিরুদ্ধে সংগঠিত, সমর্থিত নির্দিষ্ট সংজ্ঞায়িত অপরাধ কর্মকান্ডসমূহ যা সম্পুর্ণ বে-আইনী এবং এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুসারে যুদ্ধকালিন সংঘাতের সময় বেসরকারী জনগনকে খুন, লুন্ঠন, ধর্ষণ, কারাগারে অন্তরীন ব্যক্তিকে হত্যা, সেই সাথে হাসপাতাল, উপাসনালয় ইত্যাদিকে কোন ধরনের সামরিক উস্কানি ছাড়াই ধ্বংস করাকেও যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
আশা করি আপনার জেনোসাইড বা গণহত্যা কাকে বলে সেই বিষয়েও ধারণা আছে। না থাকলে আমি কিছুটা উপস্থাপন করছি। গণহত্যা বলতে নির্দিস্ট একটি ভৌগোলিক অংশে জাতি, বর্ণ, নাগরিকত্ব বা ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে একযোগে বা অপেক্ষাকৃত অল্প সময়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ হত্যা করাকে বোঝায়। এখানে আপনি ইসলাম ধর্মের বানু কুরাইজা হত্যাকান্ড যেভাবে ঘটানো হয়েছিলো সেটাও যোগ করে নিতে পারেন একটি গনহত্যা হিসাবে। কারণ আমরা জানি এফবিআই এর মতে গণহত্যা হল সেই হত্যাকান্ড যখন কোন একটা ঘটনায় চার বা তার অধিক সংখ্যক মানুষ মারা যায় এবং হত্যাকান্ডের মাঝে কোন বিরতি থাকে না। তাহলে গণহত্যা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট স্থানে ঘটে, যেখানে এক বা একাধিক মানুষ বেশিরভাগ সময় উপরে বর্ণিত কারণ বশত অন্যদের মেরে ফেলে।
১) ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান নাৎসি বাহিনী ইহুদীদের ওপর ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে নৃশংস নির্যাতন এবং গণহত্যা চালায়। ইতিহাসে এই গণহত্যাকে হলোকাস্ট বলে।
২) ১ম বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯১৫ সালে রুশ ককেসাস সেনাবাহিনী পূর্ব আনাতোলিয়ায় অগ্রসর অব্যাহত রাখলে, তুরস্কের তৎকালীন উসমানীয় সরকার স্থানীয় জাতিগত আর্মেনীয়দের স্থানান্তর এবং উচ্ছেদ শুরু করে। ফলশ্রুতিতে প্রায় ১৫ লক্ষের মত আর্মেনীয় মৃত্যুবরণ করেছিল যা আর্মেনীয় গণহত্যা বলে পরিচিত। সে সময় তারা নারী, শিশু ও বয়স্ক লোকজনদেরকে পাঠিয়ে দেয় মরুভূমিতে, যেখানে তারা পরে মারা যান।
৩) ১৯৭১ এ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান, বর্তমানে বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী নৃশংস গণহত্যা চালায়। ধারণা করা হয়, এই গণহত্যায় ৩০ লক্ষ বাঙালি হত্যা করা হয়েছিল।
উপরে বর্ণিত এই তিনটি ইতিহাসে অন্যতম বড় তিনটি গণহত্যা। এর সাথে আরও বড় গণহত্যার লিস্ট করা যেতে পারে, যেমন ইউরোপীয়দের আমেরিকা যাওয়ার পরে সেখানে কোটি কোটি নেটিভ আমেরিকানদের ওপর শত শত বছর ধরে চলা নৃশংস গণহত্যা এবং উচ্ছেদ। বা এখনকার মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চলা নৃশংস গণহত্যা। লক্ষ্য করার বিষয় হচ্ছে, প্রতিটি গণহত্যার সময়ই গণহত্যাকারীরা নানাধরণের প্রেক্ষাপট, পরিপ্রেক্ষিত, ইতিহাস বিকৃতি এবং মিথ্যাচারের অভিযোগ আনে।
এইসব হত্যাকান্ড নিয়ে আপনার ইসলামী সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে ভুলধারনা এবং এই বিষয়ে আপনার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা নিজেই যাচাই করে দেখুন। ধরুন, কাল ইউরোপে কোন বাঙালি একটি বোমা বিস্ফোরণের সাথে জড়িত ছিল বলে জানা গেল। এর প্রতিশোধ নিতে ইউরোপে যদি এখন বলা শুরু হয়, যেখানেই বাঙালি পাও হত্যা করো, তাহলে ব্যাপারটা হবে ভয়াবহ অপরাধ। কারণ অপরাধ যদি করেও থাকে, করেছে একজন মাত্র বাঙালি। তার জন্য সমস্ত বাঙালি, সেই সাথে নারী শিশু বৃদ্ধা প্রতিবন্ধী সমস্ত বাঙালিকে দোষারোপ করা যায় না। যদি কেউ তা করে, তাকে আমরা জাতিবিদ্বেষ বা বর্ণবাদ বলতে পারি। কোন বাঙালি যদি অপরাধ করেও থাকে, আইন অনুসারে সেই অপরাধীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে শাস্তি দেয়া যেতে পারে। কিন্তু একজনার অপরাধে পুরো বাঙালি জাতি ধরে কেউ হত্যা ধর্ষণ বা আক্রমণের হুমকি বা নির্দেশ দিতে পারে না। যদি বলা হয়, শেখ হাসিনা চুক্তি ভঙ্গ করেছে সেই কারণে বাঙালি পুরুষদের হত্যা করে তাদের স্ত্রী কন্যাদের গনিমতের মাল বানাও, তা হবে মানবতার চরম অবমাননা।
সেই সাথে, কেউ ইহুদী বা বৌদ্ধ বা হিন্দু বা খ্রিস্টান বা শিখ বা আহমদিয়া বা শিয়া বা সুন্নি বা নাস্তিক বা আস্তিক বা সমকামী বা বিষমকামী বা নারী বা পুরুষ কাউকেই হত্যা করতে বলতে পারে না। ধরুন আমার এক খ্রিস্টান বন্ধু আমার টাকা ধার নিয়ে ফেরত দিচ্ছে না। আমি এই অবস্থায় বলতে পারি না, খ্রিস্টানরা খারাপ, তাদের হত্যা করো। যদি বলি, তা হবে চরম সাম্প্রদায়িক বক্তব্য। যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং ঘৃণিত। কোন বা কিছু ব্যক্তির অপরাধের কারণে ধর্ম বর্ণ গোত্র সম্প্রদায় ধরে ঐ ধর্ম বর্ণ গোত্র সম্প্রদায়ের সকলের বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়া, হত্যা করতে চাওয়া, নারী শিশুদের গনিমতের মাল বানাবার চেষ্টা করা অবশ্যই বর্ণবাদী এবং সাম্প্রদায়িক আচরণ।
ইসলাম ধর্ম যে মুসলমান নামের একটি সম্প্রদায় তৈরি করেছে সেই সম্রদায়ের সন্ত্রাসী বা জঙ্গী কার্যকলাপ এর দায়ভার আপনি কোনো ভাবেই অন্যের উপরে চাপিয়ে দিতে পারবেন না কারণ এই সন্ত্রাসের বীজ ইসলাম ধর্মের কোরান, হাদীস, আল্লাহ, আর নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর বুনে যাওয়া বীজের থেকেই জন্ম হওয়া গাছ। প্রমাণ চাইলে দিতে পারি।
প্রথম পক্ষের প্রতিমন্তব্য আপনাদের আসলে লজ্জা শরম একটু কমই। কারন, আপনাদের লেখার ভিতর দিয়ে একটা জিনিষ প্রমান করতে চাইছেন, দেখ ওখানে জঙ্গী হামলায় মুসলিমরা, এতগুলো মানুষ মেরেছে, ওখানে মেরেছ। সুতরাং সব মুসলমান খারাপ, ওদের ধর। আর আপনারাই আনার সাফাই গাচ্ছেন।
একমাত্র ইসলামই একজনের দোষের কারনে অন্যজনকে দোষ দেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দিন, আপনী প্রমান দিন। যদিও ঐটার উত্তর আমি কয়েকবারই আমি দিয়েছি। তারপরও দিন দেখি নতুন কিছু কিনা। আমিও তো চাই খারাপ কিছু আছে (অন্তত আপনাদের চেয়ে খারাপ, তাহলেও তো আপনাদের বিশ্বাসে আসা যেত, যেটা আমার কাছে অভিশপ্ত বিশ্বাস মনে হয়)
দ্বিতীয় পক্ষের প্রতিমন্তব্য আমাদের লজ্জা শরমের প্রশ্ন এখানে আসছে কেনো বলেন। যুক্তিবিদ্যায় একটা কথা আছে জানেন তো ? কেউ যদি কোন কিছু দাবী করে তার সত্যতা প্রমাণ করার দ্বায়িত্ব কিন্তু তারই থাকে। এখানে আপনি দাবী করছেন ইসলাম ধর্মে জঙ্গিবাদ নেই, তাহলে সেটাও কিন্তু আপনাকেই প্রমাণ করে দেখাতে হবে ইসলামে জঙ্গীবাদ নেই। কেনো নেই, কিভাবে নেই সেটাও প্রমাণ করে দেখাবার দায়িত্ব আপনার। আর আমি এখানে দাবী করেছি ইসলাম ধর্মে জঙ্গীবাদ আছে আর সেটা প্রমাণ করে দেখাবার দায়িত্বও আমার। তাহলে আবার লজ্জা শরমের প্রশ্ন আসবে কেনো ?
সব মুসলমান জিহাদ করেনা তবে সব মুসলমানকে জিহাদ সমর্থনকারী কেনো বলা হবেনা বলেন ? যদি তারা সবাই এই ইসলাম ধর্মের ঐশ্বরিক কিতাব আল-কোরান এবং হাদীস অনুসরণ করে তাদের জীবন যাপন করে তাহলে তো তারাও এর আওতায় পড়ে নাকি ? আপনি বলেন ইসলামে কাফের, মুশরিক, মুরতাদ এবং মালাউন কাকে বলে। আমি এখানে একটু ব্যাখ্যা দিলাম দেখবেন ঠিক আছে কিনা।
(মুসলমানদের দৃষ্টিতে কাফের) - ইসলাম অনুসারে সকল মুসলিম হচ্ছে মুমিন আর সকল অমুসলিম হচ্ছে কাফের। মুমিন শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে বিশ্বাসী আর অবিশ্বাসী বা অমুসলিম শব্দের আরবী হচ্ছে কাফের। কেউ যখন বলবে, কাফেরদের মারো, তখন তা ধর্ম বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে সমগ্র অমুসলিমকেই বলবে।
(মুসলমানদের দৃষ্টিতে মুশরিক) – ইসলাম অনুসারে যারা মূর্তিপূজা করে তাদের মুশরিক বা বাঙলায় পৌত্তলিক বলে। পৌত্তলিক মানেই আরবীতে মুশরিক। কেউ যখন বলবে, মুশরিকদের জবাই করো, তখন তা ধর্ম বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে সমগ্র পৌত্তলিক বা মূর্তিপুজারীদেরকেই বলবে।
(মুসলমানদের দৃষ্টিতে মুরতাদ) – মুরতাদ হচ্ছে সেই লোক যে প্রথমে ইসলাম গ্রহন করেছিলো কিন্তু পরে ইসলাম ত্যাগ করে। হাদীস অনুসারে মুরতাদের শাস্তি হচ্ছে তাকে হত্যা করা।
(মুসলমানদের দৃষ্টিতে মালাউন) – মালাউন শব্দের অর্থ লানত প্রাপ্ত বা অভিশাপ প্রাপ্ত। এটা স্পষ্টতই একটা গালি। আল্লাহ তালাহ নিজেই কোরআনে অমুসলিমদের লানতপ্রাপ্ত এবং অভিশপ্ত বলে গালাগালি করেছেন।
এখানে যা বলা আছে তা কি ঠিক আছে না আপনার কাছে মনে হচ্ছে আমি কোন অপপ্রচার বা মিথ্যাচার করেছি এখানে ????
প্রথম পক্ষের প্রতিমন্তব্য না আপনী এখানে তেমন কোন ভুল বলেন নি, মুরতাদের ব্যাখ্যাটা ছাড়া। কিন্তু এখানে তাদের হত্যা করার কথা কোথায় বলা হয়েছে? আর হত্যা করতেই যদি বলা হত, তাহলে ইসলামের শাসন সব মিলিয়ে ছিল প্রায় এক হাজার বছর, তাহলে অমুসলিম তো তেমন থাকার কথাই না, সব তো মেরে শেষ করে ফেলার কথা। ভারতের কথাই ধরুন না, ভারতে অনুর্ধ ৪০০ বছর ইসলামিক শাসন, তারপর এখনো ভারতে মুসলিমের চেয়ে হিন্দুর সংখ্যা বহুগুন বেশী। কেন হবে তাহলে?
তারপর হাদীসে আছে তোমার কাছে যাদি এক কাপ সুপ থাকে, তাহলে তাতে আরেক কাপ পানি মিশিয়ে গরম করে এক কাপ প্রতিবেশীকে দাও, তারা যদি অমুসলিম প্রতিবেশীও হয়। সাহয্যের ক্ষেত্রে মুসলিম অমুসলিম সবাইকে সাহায্য করতে বলা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে ফরজও। আমি যাদের এখানে সাহায্য করি, তাদের অধিকাংশইতো অমুসলিম। তারপর কোরানেও আছে, "ধর্মের উপর জোরাজোরি নাই "।
আপনী যে কোরানের রেফারেন্স দিয়ে বললেন, খ্রীস্টান ইহুদীদের বন্ধুরুপে গ্রহন করো না। এটা একটা ভুল অর্থ। এখানে বলা হয়েছে, তাদের প্রটেক্টর হিসাবে নিও না। যার মানে হল, আলাহ তোমার প্রটেক্টর। বন্ধু হতে তো নিষেধ করেন নি। তবে বন্ধুত্বেরও সীমা রেখা আছে। যেমন কোন ভাবেই যেন তারা আলাহকে (সত্যিকার স্রষ্টাকে) রেখে অন্য কিছুকে উপাসক হিসাবে উপাসনা করে তার সমর্থন যেন না করে। এমনটাই তো স্রষ্টার কথা হওয়া উচিৎ, নাকি?
আপনার কাফের মুশরিক ইত্যাদি ব্যাপারে আমারো খটকা ছিল। কিন্তু সৃষ্টি কর্তার কথা হলে এমনটাই হওয়া উচিৎ না? স্রষ্টা যদি সকল ক্ষমতার অধিকারী হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি কি কাউকে কেয়ার করার কথা? তিনি কাউকে ভয় করে কথা বলার কথা না। অমন আপোষহীন কথাগুলো তো স্রষ্টাই বলতে পারে, অন্য কেউ বলতে পারে না।
দ্বিতীয় পক্ষের প্রতিমন্তব্য আপনি ওই হাফ বাটি স্যুপ আর চারটা খেজুরের হাদীস আর সেই ইহুদী বুড়ি এবং নবীজির গল্প বলে বর্তমানে আর সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারবেন না কারণ সাধারণ মানুষ বর্তমানে ভালো করেই জানে এই মানবিক করে তোলা গল্প গুলোর সাথে ইসলামের কোন সম্পর্কই নেই। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অতীতে হত্যা লুট এবং ধর্ষনের মাধ্যমে সেটা তাদের কোরান হাদীস পড়লেই পরিষ্কার বোঝা যায়।
ব্যাক্তিগতভাবে আপনার নৈতিক শিক্ষার সাথে আপনি ইসলাম নামক মতবাদ বা আইডিওলজির কোন সম্পৃক্ততা দেখাতে পারেন না। কারণ আপনি এসব ইসলাম ধর্ম থেকে পান নি। বরং আপনি যদি ১০০% ইসলাম ধর্ম ফলো করতেন তাহলে আপনার পক্ষে একজন অমুসলিমকে কোন প্রকারের সাহায্য করা সম্ভব হতোনা। বিবর্তনবাদের একটি শাখা জৈববিবর্তনীয় বিজ্ঞানে মানব মনের গতি ও প্রকৃতি সম্পর্কে অনেক ব্যাখ্যার মধ্যে একটি বাখ্যা হচ্ছে যা মানুষের প্রতি মানুষের আবেগের কথা বলে। কিন্তু ধর্ম তৈরি করে সাম্প্রদায়িকতা এবং মানুষে মানুষে দ্বন্দ। তাই মানবিকতা বা নৈতিকতার সাথে কোন ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই বা থাকতে পারেনা।
মুরতাদের ব্যাখ্যা কোথায় ভুল আছে সেটা তো বলেন নাই তাহলে বুঝবো কিভাবে যে মুর্তাদ এর ব্যাখ্যা আমি ভুল দিয়েছি। আমরা জানি "ইসলাম ধর্মে মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গিতে মুরতাদ হচ্ছে সেই লোক যে প্রথমে ইসলাম গ্রহন করেছিলো কিন্তু পরে ইসলাম ত্যাগ করে। হাদীস অনুসারে মুরতাদের শাস্তি হচ্ছে তাকে হত্যা করা" এবং এটাই হচ্ছে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা। আর এই বিষয়ে ইসলাম ধর্মে কোরানের মাধ্যমে বলা হচ্ছে নিচের কমেন্টস এ সেই আয়াতের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা দেখে নিন। আর বলবেন এখানে কি একটিও মানবিক কথা বলা হচ্ছে কিনা কোথাও ?
কোরান ৯:২৯ – তোমরা যুদ্ধ কর ‘আহলে-কিতাব’ এর ঐ লোকদের (ইহুদী এবং খৃষ্টান) সাথে যাহারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তার রসুল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহন করেনা সত্য ধর্ম ইসলাম, যতক্ষণ-না করজোড়ে তারা জিযিয়া কর প্রদান করতে বাধ্য থাকে।
কোরান ৫:৫১ – হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।
কোরআন ৮:৫৫ – “নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট নিকৃষ্ট জীব তারাই যারা সত্য প্রত্যাখ্যান করে এবং অবিশ্বাস করে।”
কোরান ৪৮:২০ – আল্লাহ তোমাদেরকে বিপুল পরিমান যুদ্ধলব্ধ সম্পদের (গনিমতের মাল/নারীসহ অন্যান্য) ওয়াদা করেছেন, যা তোমরা লাভ করবে যুদ্ধে পরাজিত মুশরিকদের কাছ থেকে।
কোরান ৪৮:১৬ – তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ-না তারা মুসলমান হয়ে যায়।
কোরান ৮:৩৯ – তোমরা কাফেরদের সঙ্গে যুদ্ধ কর যতক্ষণ না ভ্রান্তি শেষ হয়ে যায় এবং আল্লাহ র সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।
কোরান ৮:১২ – …আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব, কাজেই তাদের গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাটো জোড়ায় জোড়ায়।
কোরান ৮:১৭ – সুতরাং তোমরা তাদেরকে (কাফের) হত্যা কর নি, বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন। আর তুমি মাটির মুষ্টি নিক্ষেপ কর নি, যখন তা নিক্ষেপ করেছিলে, বরং তা নিক্ষেপ করেছিলেন আল্লাহ স্বয়ং যেন ঈমানদারদের প্রতি এহসান করতে পারেন যথার্থভাবে।
কোরান ৯:৭৩ – হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে; তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ এবং সেটা হল নিকৃষ্ট ঠিকানা।
কোরান ৯:১২৩ – হে ঈমানদারগণ, তোমাদের নিকটবর্তি কাফেরদের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভব করুক। আর জেনে রাখ, আল্লাহ মুত্তাকিনদের সাথে রয়েছেন
কোরান ৯৮:৬ – আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা কাফের, তারা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে থাকবে। তারাই সৃষ্টির অধম।
প্রথম পক্ষের প্রতিমন্তব্য আমি স্করলাদের কাছে মুর্তাদের ব্যাপারে শুনেছি, যারা ইসলাম ছাড়ার পর ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে বেড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে হত্যার পরোয়ানা থাকে (যারা করে না, তাদের না)। তো এটা হল ইসলামিক প্রশাসনের আইন। এমন আইন তো অনেক দেশেই আছে। যান না চায়নায়, চায়নার নীতির বিরুদ্ধে কথা বলুক কেউ, দেখুক না ঘাড়ে কল্লা থাকে নাকি?
আপনী কোরানের যে আয়াতগুলো দিয়েছেন, সেগুলো হল ইসলামের যুদ্ধ নীতির উপর। আপনাকে না বলেছি মিস-কোট করবেন না? এতে কিন্তু আপনারই লোকশান হয়, আমার না।
আমি আপনার কথাগুলোকে মাথায় রেখে খোজ নিয়ে যখন দেখি, আপনী ভাল সাইডগুলো এড়িয়ে শুধু খারাপ সাইড গুলো তুলে ধরেছেন, তখন আপনার সম্পর্কে আমার কিরুপ ধারনা জন্মাবে? মুক্তমনা? নাকি নোংড়ামনা? আর আপনারা যারা এভাবে কৌশলের আশ্রয়ের কারনে আপনাদের প্রতি যে বিরূপ ধারনা জন্মাবে, সেটাই আপনাদের কাল হয়ে দাড়াবে। তখন সত্য বললেও মানুষ বিশ্বাস করতে চাইবে না। কিছু বোকা লোক আছে, যারা আপনার এহেন উপস্থাপনা দেখেই খোজ খবর না নিয়েই বিশ্বাস করবে জানি, কিন্তু সবাই না। আর এ কারনেই কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বে মুসলমান হওয়ার হার অনেক বেড়ে গেছে।
আমি গতবার আপনার কোরানের যুদ্ধনীতির মিস কোটিংএর প্রক্ষাপটে আরেকটা যুদ্ধ নীতির একটা মহান আয়াত দিয়ে বুঝিয়েওছিলাম, এমন মহান নীতি আগে তো দুরের কথা বর্তমান কোন সেনা নায়কও করে না। তারপরও এভাবে লেখার মানেই হল, অন্য কিছু।
আমার অত সময় নেই, নইলে লেখার ছিল অনেক কিছু। আমি আপনার দেওয়া প্রথম আয়াতটা নিয়ে কিছু কথা বলব পরের কমেন্টে।
গণিমত প্রসংগে (আসলে আপনার দেওয়া এটাই প্রথম আয়াত মনে করেছিলাম) তবে তার আগে একটা কথা বলে নেই, কোরান পড়লে বুঝা যায়, কোরন অতীত, বর্তমান ভবিষ্যৎ, সব সময়ের জন্য উপযোগী। আপনার গনিমতের মাল বা যুদ্ধ লদ্ধ সম্পদের আয়াতের ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন আসলে,
## আপনী যে গনিমত বুঝাতে ব্রাকেটের ভিতর 'নারী' শব্দটি উল্লেখ করেছেন, ওতে 'পুরুষ' শব্দটি নাই কেন?
## নারী কি ঘর থেকে ধরে ধরে আনা, নাকি যুদ্ধে অংশ গ্রহন করা নারী?
## বর্তমানে যুদ্ধে অংশগ্রহন করা নারীরা ধরা পড়লে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়? নাকি ধর্ষনে ধর্ষনে প্রায় শেষ করে ফেলা হয়?
## তখনকার সময়ের যুদ্ধনীতি এবং অমুসলিমদের যুদ্ধনীতি কি ছিল, তা ব্যাখ্যা করেন নি কেন? অমুসলিমরা কি নারী বন্দীদের ছেড়ে দিত?
ম্যান, তুলনা করলে ইসলামের যুদ্ধনীতি ও দাস নীতির চেয়ে উত্তম কোনটাই পাবেন না।
দ্বিতীয় পক্ষের প্রতিমন্তব্য যারা ভালো ইসলাম সম্পর্কে জানবে তারাই তো ইসলামের কালো অধ্যায় সম্পর্কে জানতে পারবে তাইনা ? তারপরেই সেই ইসলামের কালো অধ্যায় সম্পর্কে অন্যান্য ইসলাম ধর্ম পালনকারীদেরকে সচেতন করবে কিন্তু তাদের হত্যা করা কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয় ?
আপনাকে আগেই তো আমি যুদ্ধনীতি দেখিয়েছি ইসলাম ধর্মের যত মানুষ হত্যা করা হয়েছে, যুদ্ধের আওতায় নারী শিশুকে আনা হয়েছে তা কোনদিনও যুদ্ধনীতির মধ্যে পড়েনা। যুদ্ধের মধ্যে শত্রুপক্ষের কোন নারীকে ধর্ষণ করা মানে হচ্ছে যুদ্ধাপরাধ করা বর্তমান আইন অনুযায়ী যার সাজা হতে হবে। আর ইসলামে সেটা পবিত্র দায়িত্ব তাহলে সেটা কিভাবে সঠিক যুদ্ধনীতি হয় ?
হাস্যকর কিছু প্রশ্ন ছাড়া আর কিছুই না আপনার গনিমতের মাল সম্পর্কে ধারনা গুলো। আপনি গনিমতের মালের ব্যাখ্যা চাইলে আমার কাছ থেকে নিতে পারেন। আপনার ব্যাখ্যা হচ্ছে ভুল।
প্রথম পক্ষের প্রতিমন্তব্য মানবাধিকার লঙ্ঘন তো অনেক দেশের সংবিধানেই আছে, তো যান না সেই কালো অধ্যায়ের কথা বলতে, যান না, চায়না বা রাশিয়ায়, ধরে মাথা রাখবে না। আর তাছাড়া আপনী দুর থেকে কিছু একটা দেখেই কালো অধ্যায় বলে ফেলে দেশের মধ্যে আরাজকতা তৈরী করবেন, ঐ দেশের সরকার বুঝি মেনে নেবে। তাছাড়া তাদরওতো ঐ ব্যাপারে নিজেদের ব্যাখ্যা আছে, নাকি। তাছাড়া মানবাধিকারের সীমা আপনীওতো লঙ্ঘন করে, তার খবর রাখেন কিছু? বললে বলবেন, না এটা ওই কারনে ওটা এই কারনে...। আপনারটার যদি ব্যাখ্যা থাকে, তাহলে অন্য সবাার থাকবে না কেন?
কোরানে কোন নারী শিশুকে যুদ্ধের আওয়াতায় আনা হয়নি, বাজে বকবেন না। হাদীসে একটা একবারই হয়েছে, যার জন্য মুহাম্মদ দঃ দায়ী নন। দায়ী বনু কুরাইজা নিজে। মুসলমানদের সাথে চুক্তিতে ভঙ্গ করে আবু জাহেলদের সাথে হাত মিলিয়েছিল, ভেবেছিল মুসলমান এইবার শেষ। কিন্তু কিভবে যেন মুসলমানেরা জিতে যায়, এবং তাদের সাথেও যুদ্ধ হয় এবং তারা হার। তাদের আনা হয় মুহাম্মদ দঃ এর কাছে চুক্তি ভংগের বিচারেরর জন্য।
তখন বনু কুরাইজার নেতা মুহাম্মূ দঃ এর বিচার মানতে রাজী না, তারা তাদের গোত্রের থেকে আসা সদ্য মুসলমান হওয়া একজন ইহুদীর বিচার মানতে রাজী হল, মুহাম্ম দঃ তাতেই রাজী হলেন। তারা বুঝতে পারে নাই যে, সদ্য মুসলমান যে আরো কঠিন ও আপোষহীন হয়। এবং তার বিচারের রায় ছিল সেটা। ওটা মুহাম্মদ দঃএর ছিল না। বরং ঐ বিচার মুহাম্মদ দঃ হলে অবশ্যই নারীও শিশুদের ছেড়ে দিতেন। তার ক্ষমার ইতিহাস তাই বলে। জানেন তো যেই ইহুদী মহিলা খাবারের সাথে মুহাম্মদ দঃকে খুব শক্তিশালী বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল, যার কারনে তাঁর মৃত্যু হয়, তাকেও তিনি ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, জানেন তো?
শত্রু পক্ষের নারীকে ধর্ষনঃ আপনারা সমানে শত্রু পক্ষের নারীদের ধর্ষন করেন কয়টার বিচার করেন। যারা যুদ্ধে যায় নাই, তাদেরকেও ধরে ধরে ধর্ষন করেন(ইরাক, বসনিয়া, বার্মা.....), বাড়ী থেকে ধরে এনে এনে। সুতরাং ঐসব বিচারের কথা বলে ফাজলামো করতে আসবেন না। ইসলামের নীতিতে কোথায় ধর্ষন করতে দেখেছেন? বন্দিনী দাসী হবে, দাসী মুক্তি দিয়ে বিয়ে করার কথাও বলা আছে। দাসীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেক্স করা যাবে না। দাসীর ঘরে সন্তান হলে পর থেকে তাকে আর দাসী বলা যাবে না, ঐ সন্তানের নাম ধরে "ওমুকের মা" বলতে হবে। এ ব্যাপারে আমার কাছে বিশদ আছে এ ব্যাপারে। তাছাড়া তখনকার নিয়ম নীতিকে বর্তমানের দৃষ্টি ভঙ্গীতে বুঝাতে চাচ্ছেন কেন? এটা কি একটু বেশী চালাকি হয়ে গেল না?
এ জন্যই আমি প্রশ্ন করেছিলাম, তখনকার সময়ে অমুসলিমরা কি গনীমতের মাল হিসাবে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের নিত না? ছেড়ে দিত, নাকি?
তখনকার সময় বন্দীদের যদি চয়েজ দেয়া হত, যেহেতু তোমরা যুদ্ধ বন্দী, তোমাদের করোর না কারোর ঘরের দাস বা দাসী হতে হবে, তবে তোমাদের চয়েজ দেয়া হবে, হয় মুসলিমদের ঘরে, নয়তে অমুসলিমদের ঘরে। বিশ্বাস করেন আর না করেন, তখন তারা মুসলমানদের ঘরের দাস হওয়ার জন্য কম্পিটিশন লাগাবে, কে কার আগে যাবে। কারন তারা জানে মুসলিমদের ঘরে দাস হলে মুক্তি পাওয়ার সম্আাবনা আছে(মুসলিমরা ওয়াদা ভাংলে কাফ্ফরা হিসাবে অনেকগুলো দাসদাসী মুক্তি করে দেয়। দাস মুক্তি তারা পূন্য মনে করে। মালিক যা খাবে, দাসকেও তা খেতে দেয়, তারা যেমন কাপড় পরে ধান করে, তেমন কাপড়ই তাদের পরিধান করতে দেবার আইন করে দিয়ে গেছেন মুহাম্মদ দঃ। সাধ্যের বাইরে কাজ দেওয়া যাবে না, ইত্যাদি।
আপনার কি মনে হয়, যারা যুদ্ধে যেত, তারা কি এই আশা করে যুদ্ধে যেত যে, তারা বাড়ী ফিরে আসবে? মেয়েরা নিজেদের একটু বেশী করে সাজিয়ে নিত, যাতে শত্রুর কাছে ধরা পড়লেও পদস্থ লোকদের নজরে পড়ে।
যাই হোক, কোন কিছু ভাল-খারাপ মাপতে তখনকার সমাজের ভাল-খারাপ দিয়ে মাপতে হবে। বেশী চালাক হবেন না প্লীজ। আমাকে শিখাবেন, আমার ব্যাখ্যা ভুল?
দ্বিতীয় পক্ষের প্রতিমন্তব্য আপনি হয়তো খেয়াল করেননি আমি কিন্তু কোথাও বলিনা যে আমি যেই কথাটি বলেছি সেটাই চুড়ান্ত সত্য যেটা মুসলমানরা মনে করে থাকে তাদের আল-কোরান এর ক্ষেত্রে। আমার কথা হচ্ছে আমার কি ভুল আছে যদি কারো কাছে তা মনে হয় সেটা আমাকে ধরিয়ে দিন, কিন্তু যখন দেখা যায় কেউ সেটা ধরিয়ে দিতে ব্যার্থ তখন নিশ্চয় আমার বা অন্যান্যদের বুঝে নিতে কষ্ট হবার কথা নয় যে আমার উপস্থাপনের বিপক্ষে আর কোন ব্যাখ্যা নেই। আর যদি থেকে থাকে তাহলে তারা ব্যাখ্যা করে দেখাক আমিতো বলি নাই যে আমি অস্বীকার করবো। রাশিয়া, চীন তাদের দেশে কেমন মানবাধিকার আইন করে রেখেছে সেটা বর্তমান ইসলামিস্টদের পরিস্থিতিতে মুখ্য বিষয় নয় তাই এটাকে এখানে না টানাই ভালো।
"কোরানে কোন নারী শিশুকে যুদ্ধের আওয়াতায় আনা হয়নি, বাজে বকবেন না তবে শুধুমাত্র এক যায়গায় হাদীসে আনা হয়েছে" এর মানে আপনি কি বোঝাতে চাইলেন ? এতে বোঝা যায় (আমি তো মাছ খায়না তবে একটু আধটু মাছের ঝোল খায়) এরকম কিছু নাকি ? কে কার সাথে হাত মেলাবে আর কে কার সাথে হাত মেলাবে না এটা সম্পুর্ণ মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা শক্তির ব্যাপার আপনি বা আপনার নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কে এই কারণে কোন মানুষকে হত্যা করার ? এভাবে নারী শিশুদের হত্যা করা কি মানবাধিকার লঙ্ঘনের আওতায় পড়েনা না ? একবার ঠান্ডা মাথায় নিরাপেক্ষ দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করে দেখবেন। আর ইসলামে যে নারী শিশু যুদ্ধের আওতায় নেই তা এই একটি মাত্র কোরানের আয়াত থেকে প্রমাণ করে দিন -
“কোরান ৪৮:১৬ – তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ-না তারা মুসলমান হয়ে যায”
শত্রু পক্ষের নারীকে ধর্ষন এটা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধ এটা মুসলমানদের কাছে ফালতু আইন মনে হতে পারে আমার কাছে না। গনিমতের মাল হিসাবে পুরুষদের ছেড়ে দেওয়া হবে কেনো পুরুষদের মধ্যে তাদের নিন্মাঙ্গের চুল পরীক্ষা করে তাদের হত্যা করা হতো অথবা দাস বানানো হতো আর নারী এবং তাদের ধনসম্পত্তি বেআইনিভাবে লুট করা হতো যা বর্তমান আইনে ডাকাতির পর্যায়ে পড়ে। ইরাক, বসনিয়া, বার্মাতে যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়নি তাই বাংলাদেশেও তার বিচার হবেনা আর বিচার চাইলে আপনি বলবেন ফাজলামো করবেন না, আপনার কাছে কি মনে হয় যুদ্ধাপরাদের বিচার করা ফাজলামো ? এটা মুসলমানদের কাছে ফাজলামো হতে পারে কারণ তাদের কোরানে এসব পবিত্র কাজ বলা হয়েছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রধান ও একমাত্র বিরোধী পক্ষ সেই মুসলমান আর মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকদের মধ্যে কি ধর্ষণ, হত্যা ও লুটের মতো যুদ্ধাপরাদের অভিযোগে, গোলাম আজম, কাদের মোল্লা, সাইদী আর এদের চেলাবেলাদের বিচার হয়নি ? পাকিস্তানে ১৯৫১ সালে কি জামায়াতে ইসলামীর অশিক্ষিত প্রধান মওদুদীর বিচার হয়নি ? এসব আপনার কাছে ফাজলামো মনে হলেও এটাই চরম সত্য যে তারা ইসলামের আদর্শ অনুসরণ করছিলো।
এরপরের প্রতিমন্তব্যে এখানে নিরাপেক্ষভাবে বিচার করে দেখার আহব্বান করে, একাধারে একজন মুফতী, হাজী, বাংলাদেশের একটি মাদ্রাসার এক্স প্রিন্সিপ্যাল, একটি মসজিদের এক্স ঈমাম, এবং সর্বোপরী একজন এক্স মুসলিম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ভাইকে মেনশন করা হয়।
Abdullah Al Masud ভাই, আমার খেয়াল ছিলোনা এই পোস্টে আপনাকে ট্যাগ করা আছে তা। অনেক আগের একটা পোস্ট এটা গতবছরের ঘটনা। আচ্ছা আপনি একজন নিরাপেক্ষা মডারেটর হিসাবে এখানে দেখুন, আমি কি প্রথম পক্ষের সাথে তার দাবীর বিপক্ষে ইসলামের নামে একটিও মিথ্যাচার বা ভুল ব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়েছি কিনা ? উনি নিজেকে মুসলমান দাবী করে ইসলামকে মানবিক বলতে চাই। ইসলাম সম্পর্কে আপনার প্রাতিষ্ঠানিক যে শিক্ষা আছে সেটার ১০% যে তার বা আমার নাই সেটা সকলেই জানে। আপনি একটু সময় নিয়ে এই বিতর্কটি দেখবেন এবং আপনার মতামত দিবেন আশা করি।
মৃত কালপুরুষ
০৬/১১/২০১৮
ঢাকা

অভিজিৎ রায়’দের কোনদিন হত্যা করা সম্ভব নয়, তারা এভাবেই বেচেঁ থাকবে।



বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ার তূমুল আলোচনা সমালোচনার মধ্যে একটি মন ভালো করে দেবার মতো তথ্য আজ আবারও নতুন করে বাংলাভাষীদের উদ্দেশ্যে বাংলাতে প্রকাশ করলেন নতুন প্রজন্ম এবং মুক্তচিন্তকদের বহুল পঠিত বই “বিবর্তনের পথ ধরে” বইয়ের লেখিকা এবং বাংলাদেশে জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রচার এবং প্রসারে অগ্রনী ভূমিকা রাখা অভিজিৎ রায়ের প্রতিষ্ঠিত “মুক্তমনা”র বর্তমান প্রধান Bonya Ahmed আপু। তিনি বাংলাদেশের এলজিবিটিকিউ আন্দোলনের সাথে যারা আজ জড়িত এবং এই আন্দোলনের জন্য অতীতে বাংলাদেশের একশ্রেনীর মানুষের হাতে নিজেদের জীবন দিতে হয়েছিলো যাদের তাদের জন্য একটি বৃহৎ প্রাপ্তির খবর দিলেন আমাদের।
বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এলজিবিটিকিউ বা (LGBTQ - Lesbian, Gay, Bi-sexual, Transgender, Queer) সম্পর্কে চিরকাল ধরে প্রচলিত থাকা নানা কুসংস্কার এবং তাদের প্রতি ঘৃণার বিপক্ষে কথা বলার বা এই সম্পর্কে সাধারণ মানুষদের সঠিক তথ্য দেবার মতো কেউ ছিলোনা একটা সময়। যে কারণেই প্রকৃতিগতভাবেই যারা মানসিক এবং শারিরিক ভাবে Lesbian, Gay, Bi-sexual, Transgender, Queer এর অধিকারী ছিলেন তাদের কথা চাপা পড়েই থাকতো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে। তাদের প্রতি একপ্রকারের ক্ষোভ, ঘৃণা এবং সর্বপরী কিছু ধর্মীও ও কিছু সামাজিক নেতিবাচক ধ্যান ধারনার কারনে নিজেদের অধিকার আদায়ে ব্যার্থ হওয়া এবং নিজেদের অধিকারের কথা বলার কোন উপাই খুজে পেতো না তারা। এরই মধ্যে এই বিষয়ে তাদের কথা বলা এবং তাদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতে দেখেছিলাম প্রথম ২০০১ সালের মে মাসে প্রকৌশলী, লেখক এবং ব্লগার অভিজিৎ রায় এর প্রতিষ্ঠিত “মুক্তমনা” নামক মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারী ওয়েবসাই্টটিকে।
মুক্তমনার ওয়েবসাইটে প্রথম তাদের পক্ষে কমবেশি অনেকেই কথা বলা শুরু করেছিলো। এখান থেকেই তাদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক পরে প্রকাশিত হওয়া একটি ম্যাগাজিন এর নাম সবাই জানতে পারলো প্রথম ২০১৪ সালের জানুয়ারী মাসে। অনেকেই হয়তো ধরতে পেরেছেন আমি সেই “রুপবান” ম্যাগাজিনের কথাই বলছি। আমার জানা মতে এখন পর্যন্ত বর্তমানে বাংলাদেশে এই “রুপবান” ম্যাগাজিনই প্রথম এবং একমাত্র ম্যাগাজিন যা Lesbian, Gay, Bi-sexual, Transgender, Queer এর পক্ষে কথা বলে। এই বিষয়টিকে বাংলাদেশের গোড়া ধার্মীক এবং বিজ্ঞান সম্পর্কে যাদের জ্ঞান সীমিত তাদের পক্ষে মেনে নেওয়াটা যে একেবারেই কঠিন কাজ ছিলো সেটা সকলেরই জানা ছিলো। সমস্যাটা ঠিক তখন শুরু হয়নি হয়েছিলো তার আরো পরে যখন এই রুপবান ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং সহ-সম্পাদক দুইজন এলজিবিটি হিউম্যান রাইটস এক্টিভিস্ট কে বাংলাদেশের মৌলবাদীদের টার্গেটে ফেলা হলো।
বাংলাদেশি একজন কমিউনিটি লিডার এবং এলজিবিটি হিউম্যান রাইটস এক্টিভিস্ট জুলহাজ মান্নান এই রুপবান পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা এবং সম্পাদক ছিলেন জিনি প্রথম ২০১৪ সালের জানুয়ারীতে রুপবান নামক ম্যাগাজিন প্রকাশ করেন। এরপরে ২০১৫ সালে জুলহাস মান্নান এর সাথে তার বন্ধু মাহাবুব রাব্বী তনয় এই রুপবান পত্রিকার প্রথম সাধারণ সম্পাদক হিসাবে যোগ দেন এবং এই এলজিবিটি আন্দোলনের পক্ষে কাজ করা শুরু করেন। কিন্তু তারা দুইজনেই খুব শীঘ্রই বাংলাদেশের মৌলবাদীদের টার্গেটে পরিনত হয় রুপবান নামক ম্যাগাজিন প্রকাশের ফলে। মাত্র ২ বছরের ব্যাবধানে ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে এই দুইজনকে একই সাথে তাদের বাসায় ঢুকে নির্মমভাবে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করে কিছু ধর্মীও উগ্রবাদী অমানুষেরা। তারপরেও থেমে থাকেনি মানুষের অধিকারের পক্ষে রুপবানের কথা বলা এবং এগিয়ে চলা।
সম্প্রতি হঠাৎ বন্যা আপুর এই পোস্ট দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগছে যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্যে সাহসিকতার সাথে কাজ করা এবং নিজেদের জীবন দিয়ে যারা তার প্রতিদান দিয়েছেন সেই দুইজন মানুষ এবং তাদের প্রতিষ্ঠিত ম্যাগাজিন রুপবানকে মুল্যায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিকোর একটি প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম ফ্রম রিলিজিয়ন ফাউন্ডেশন (FFRF) এবং মুক্তমনা এটা শুনে। সেই সাথে আরো ভালো লাগছে এটা দেখে যে (FFRF) এবং মুক্তমনা এই বিষয়ক যে বাৎসরিক পদক বা এওয়ার্ড দেবার সীদ্ধান্ত নিয়েছেন যার নামকরণ করা হয়েছে “অভিজিৎ সাহসিকতা পুরস্কার” বা (Avijit Courage Award) নামে সেটা দেখে। বাংলাদেশের মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারীদের আলোর যাত্রী “অভিজিৎ রায়” এভাবেই আমাদের মাঝে থাকবে। যারা একদিন “অভিজিৎ রায়কে” প্রকাশ্যে হত্যা করেছিলো তারা আবারও দেখুক তারা ব্যার্থ, তারা অভিজিৎ রায়কে কখনই হত্যা করতে পারবেনা, অভিজিৎ রায়েরা এভাবেই বেচেঁ থাকবে সকলের মাঝে চিরোকাল। কৃতজ্ঞতা জানাই (FFRF) এবং মুক্তমনা কে। এবং অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা রইলো রূপবান এর প্রতি।
বন্যা আপুর টাইমলাইনে প্রকাশিত এই বিষয়ক বাংলা লেখাটি এই লিংকে দেখতে পারেন। https://www.facebook.com/bonya.ahmed/posts/2058823654139417
-মৃত কালপুরুষ
০৬/১১/২০১৮

বৃহস্পতিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৮

একটি প্রশ্ন।




মূল বিষয়টি সত্যিই খুব দারুন ছিলো, এভাবে অনেকেই সব কিছু দেখে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা যদি এভাবেই চিন্তা করতে পারে তাহলে আগামীর বাংলাদেশ হবে অনেক উন্নত যা প্রকাশ করে বোঝানো যাবে না। গতকাল আমিও এই ছবি গুলোর থেকেই একটা ছবি দেখেছিলাম কারো পোস্ট করা ফেসবুক স্টাটাসে, যেখানে ছবির ছেলেটির চেহারা ঢেকে দেওয়া হয়েছিলো। এই কারনে অনেকেই মন্তব্য করেছেন হয়তো নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে। আমার মনে হয়েছে সেটা করা ঠিক আছে। কারণ, প্রতীকি ছবি হোক আর কোন সন্তান গ্রাজুয়েট হবার পরে তার রিক্সাচালক বাবাকে তার গাউন পরিয়ে যদি ছবি তুলে সোস্যাল মিডিয়াতে দিয়েই থাকেন তাহলে তার চেহারা ঢেকে সেই ছবি শেয়ার করা ঠিক হয়নি। এতে করে একটা হীনমানসিকতার প্রকাশ দেখা যায়।

এখন কথা হচ্ছে, যারা না বুঝেই এটা নিয়ে নেতিবাচক স্টাটাস দিয়েছিলেন বা মন্তব্য করেছিলেন তারা মূল ঘটনা না জেনে না বুঝে করেছেন ঠিক আছে তারা সবাই বোকামী করেছেন। অতিরিক্ত আবেগ দেখাতে গিয়ে তারা বোকা হয়েছেন। আর যদি এই ছবির ব্যাক্তিটির কাছ থেকে বা ফটোগ্রাফারের কাছ থেকে আসল ছবি নিয়ে কেউ ছেলেটির মুখ ঢেকে সেই ছবি আবার নতুন করে পাবলিশড করে থাকেন তাহলে যারা ছেলেটির চেহারা ঢাকার কাজটি করেছেন সেটা চরম অন্যায় করেছেন। এই কারণেই অন্যায় হয়েছে, ছবিটিতে সকল বাবাদেরকে ছোট করে দেখানো হচ্ছে তাই। আর সর্বোপরি সেই ছবির আসল ব্যাক্তিটির (যদি হয়ে থাকে) নিচের পোস্টটি থেকে জানা যাচ্ছে সে নিজেই নাকি তার মুখটি ঢেকে সোস্যাল মিডিয়াতে তা শেয়ার করেছিলো।

এটা তার করা নিচের পোস্টে তার স্বীকারোক্তি এবং এই মুখ ঢাকার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে যদি তিনি এই স্টাটাসটি দিয়েই থাকেন তাহলে তার নতুন করে আবার এই কথাটি বলা কতটা যৌক্তিক ছিলো ? "দুঃখিত আমি যে মুখ ঘোলা করার জন্য তবুও বলি, এসব মানুষের মাথা খালি বলেই আমাদের মাথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হুড! যাঁরা ভুল বুঝেছেন আমি তাঁদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি ফটোগ্রাফারের হয়ে" নতুন করে এখানে যেই মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ আবার দেখছি সেটা কি (তার কথা মতে) “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হুড” মাথায় থাকা কোন ব্যাক্তির মনোভাব হতে পারে ? পাঠকদের কাছে আমার একটি প্রশ্ন আসলে ভুলটি কার ছিলো ?


Liton Mustafiz

স্যালুট...
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম সমাবর্তনে এ ছবির একটি বিশেষ অংশ গতকাল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছবির ঐ অংশটি সম্ভবত বিভিন্ন গ্রুপ হয়ে ব্যক্তি থেকে আরম্ভ করে জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ফটোগ্রাফার শাহরিয়ার সোহাগ গতকাল অপরাজেয় বাংলার সামনে থেকে এ ছবিটি তোলেন। রিকশায় যিনি বসে আছেন তিনি আমাদের গর্বিত একটি অংশ। মনেই হয়নি সে মুহূর্তে তিনি অন্য একটি অংশ। পৃথিবীর আর সব বাবার মতো এ বাবার চোখেও আমি স্বপ্ন খুঁজে পাই। মোটেও মনে হয় নি তার গায়ের ঘাম লাগলে দুর্গন্ধী হয়ে উঠবে আমার গাউন। এমন ঘামের চর্মশরীরে বেড়ে ওঠা আমার। আমি বিশ্বাস করি পৃথিবীর চাকা এ 'পিতা'দের ঘামে ও দমে ঘোরে।


আমরা যখন খুব আনন্দ করছিলাম তখন তিনি আনমনা নজরে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। বিষয়টি আমি বুঝে 'পিতা'কে ডাক দেয়। তিনি সাড়া দেন। আমি আমার গাউন, হুড খুলে 'পিতা'কে পরিয়ে দেই। তারপর ছবি তোলা হয়। একজন গর্বিত গ্রাজুয়েট মনে হচ্ছিলো তখন আমার। এঁদের রক্ত ঘামানো অর্থেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পেরেছি। এ 'পিতা'র পোশাক দেখে স্যালুট না করে পারি নি। এ ছবি তুলে রাতেই ফেইসবুকে পোস্ট করেন ফটোগ্রাফার। ছবিটি ভাইরাল হলে দেখা যায় অনেকেই আমাকে ভুল বুঝছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছবিটি নিউজ হয়ে গেছে। দুঃখিত আমি যে মুখ ঘোলা করার জন্য তবুও বলি, এসব মানুষের মাথা খালি বলেই আমাদের মাথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হুড! যাঁরা ভুল বুঝেছেন আমি তাঁদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি ফটোগ্রাফারের হয়ে। এসব মানুষেরা আমাদের সত্যিকার বাবা-ই। কারণ আমি নিজেও কৃষকের লাঙলের ফালা বেয়ে উঠে এসেছি...

 -মৃত কালপুরুষ
  ০৪/১০/২০১৮

মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮

ঈশ্বর পুত্র “আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট” কি সত্যিই জিউসের পুত্র ছিলো ?


এই চিত্রকর্মটির নাম “এ ম্যান ইন আর্মর” ছবিটি মৃত্যুর ২ হাজার বছর পরে ১৬৫৫ সালে চিত্রকার “র‍্যামব্র্যান্ড ভ্যান রিজন” এর আকাঁ “আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট” এর একটি যুবক বয়সের ছবি। অবশ্য আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট জীবিত ছিলেন মাত্র ৩৩ বছর। ধারনা করা হয় আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট ছিলেন দেবতা জিউস এর সন্তান। এই দাবী আলেকজান্ডার এর শিক্ষক দার্শনিক “এরিস্টটাল” অস্বীকার করে বলেন আলেকজান্ডার এর মাতা অলিম্পিয়াস ছিলেন একজন উচ্চাকাঙ্খী নারী, তিনি আলেকজান্ডারের পিতা ফিলিপ’কে একটি গল্প বলে মানুষকে বোকা বানাবার জন্য এমন তথ্য প্রচার করেছিলেন।

দার্শনিক এরিস্টটাল আলেকজান্ডারের ১৩ বছর বয়সে তার শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পান। দীর্ঘ দুই বছর এরিস্টটাল তাকে বিভিন্ন শিক্ষা দিয়েছিলেন। আলেকজান্ডারের পিতা দ্বিতীয় ফিলিপ তাদের শ্রেনীকক্ষ হিসাবে ‘ম্যাসেডোনিয়া’ রাজ্যের ‘মিয়েজান’ নামক মন্দিরটি দিয়ে দেন। ১৬ বছর বয়সে যখন আলেকজান্ডার দার্শনিক এরিস্টটালের কাছে তার শিক্ষা শেষ করেন তখন পিতা দ্বিতীয় ফিলিপ তাকে রাজপ্রতিনিধি এবং উত্তরাধিকারী হিসাবে নিয়োগ করেন। এরপরে প্রথমেই আলেকজান্ডার বর্তমান তুরুষ্কের আনাতোলিয়া সালতানাত বা বাইজেন্টাইন সম্রাজ্য আক্রমন করে নিজের দখলে নেন। একে একে আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট খেতাবে ভূষিত হন তার সমস্ত যুদ্ধ জয়ের নানান কৌশলের কারনে। একটা সময় সে রোমান সম্রাজ্য থেকে এশিয়া মহাদেশ এবং তৎকালীন ভারত উপমহাদেশ দখল করে সমস্ত পৃথিবীতে রাজত্ব করার ঘোষনা দেন।

আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট কোন ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন না তবে তার মাতা অলিম্পিয়াস প্রচার করেছিলেন আলেকজান্ডার দেবতা জিউসের পুত্র। অলিম্পিয়াস বলেন সে আলেকজান্ডারের পিতা রাজা দ্বিতীয় ফিলিপকে বিয়ে করার পরেই তার গর্ভে আকাশ থেকে বজ্রপাত হয়। আর এই বজ্রপাতের ফলেই নাকি অলিম্পিয়াস গর্ভবতী হন এবং দেবতা জিউসের সন্তান আলেকজান্ডারের জন্ম দেন। একটি শক্তিশালী রাজা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী একজন রাণীর পুত্র হওয়াতে  আলেকজান্ডারকে অনেকেই দেবতা পুত্র হিসেবেই মানত।

মাত্র ২০ বছর বয়সেই আলেকজান্ডার ম্যাসেডোনেয়ার রাজা হন এবং মাত্র ১৩ বছরের রাজত্বকালেই তিনি যে কৃতিত্ব দেখান তাতে অনেকেই তাকে দেবতাপুত্র বলেই মনে করতে থাকেন। ধর্মভীরু মানুষেরা আলেকজান্ডারের জীবনীর সাথে নাকি দেবতা একিলিসের বংশধর এবং দেবতা জিউসের পুত্রের অনেক মিল খুজে পেয়েছেন যে কারণে পার্শিয়ানদের অনেকেই তাকে দেবতার আসনে বসিয়েছিলো।

ছবিঃ https://www.akg-images.de/Browse/DE_Collections

মৃত কালপুরুষ
-০২/১০/২০১৮

x